২৮, ২৯, ৩০ ও ৩৩তম বিসিএস—এই চারটি পরীক্ষার অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ও পরিদর্শক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) নন-ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে এরই মধ্যে এ নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই নিয়োগ-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।
শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অধিদপ্তরে এআইজিসহ পরিদর্শক নিয়োগ হবে মোট ২০০ জন। এর মধ্যে ৬৭ জন প্রথম শ্রেণীর এআইজি ও ১০০ জন দ্বিতীয় শ্রেণীর পরিদর্শক। ৩৭ জন পরিদর্শক ইতোমধ্যেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ গতকাল ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জানান, ‘আইন মন্ত্রণালয় এ নিয়োগের ব্যাপারে ইতিবাচক মতামত দিয়েছে। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যেই নিয়োগের কাজ সম্পন্ন হবে।’
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের পর কারখানা পরিদর্শকের দৈন্যদশার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে রূপান্তর এবং এতে কয়েক শ পরিদর্শক নিয়োগের জন্য চাপ দেয়। অবশ্য এর আগেই ইইউ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের (আইটিইউসি) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল বাংলাদেশ সরকার। সে অনুযায়ী ২০১৩ সালের মধ্যেই পরিদর্শকের সংখ্যা বাড়িয়ে ২০০ জন করার কথা। আর গত বছরের জুনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যসুবিধা (জিএসপি) বাতিলের পর যে ১৬ দফা কর্ম পরিকল্পনা দেয়, তারও অন্যতম শর্ত ছিল পরিদর্শক নিয়োগ। প্রসঙ্গত, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তর থেকে অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়েছে কয়েক মাস আগেই। শ্রমসচিব মিকাইল শিপার বলেন, ‘পিএসসির অনুমোদন পাওয়া গেছে। এআইজি ও পরিদর্শক নিয়োগে এখন আর কোনো বাধা নেই।’
দেশে অনুমোদিত পোশাক কারখানা রয়েছে ২৮ হাজার। ঢাকাতেই রয়েছে ১৭ হাজার কারখানা। এগুলো পরিদর্শনের জন্য পরিদর্শক ছিল এত দিন মাত্র ৪৬ জন। রানা প্লাজা ধসের পর ৩৭ জন পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, আইনে ছিল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে শুধু প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে পারবে পিএসসি। এটি সংশোধনের ফলেই নিয়োগ দেওয়াটা সহজ হচ্ছে। ৩৩তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেই নিয়োগ দেওয়ার চিন্তা করা হয়েছিল। নানা বিবেচনায় পরে ২৮, ২৯ এবং ৩০তম বিসিএসকেও যুক্ত করা হয়।
