ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হয় ‘গ’ ইউনিটে। তাই সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই নামতে হবে আদাজল খেয়ে। ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীদের দরকারি পরামর্শ দিয়েছেন ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ‘গ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী জানে আলম
‘গ’ ইউনিটে মোট নম্বর ২০০। ভর্তি পরীক্ষা হয় ১২০ নম্বরের। বাকি ৮০ নম্বরে কত পাবে, তা নির্ধারিত হবে এসএসসি ও এইচএসসির প্রাপ্ত জিপিএর ভিত্তিতে। বাংলা এবং ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে খুব সহজে নম্বর তোলা যায়। ইংরেজি ও হিসাববিজ্ঞান তুলনামূলক কঠিন হওয়ায় এ দুটি বিষয়ে অতিরিক্ত সময় দিতে হবে। অন্যান্য বিষয়ে অনেক ভালো নম্বর তোলার পরও ইংরেজিতে ন্যূনতম ১২ নম্বর না পেলে কিন্তু ভর্তির সুযোগ মিলবে না।
বাংলা
৩০ নম্বরের পরীক্ষায় ২৫টি প্রশ্ন হয়ে থাকে বাংলায়। সাধারণত গদ্য ও পদ্য- অর্থাৎ প্রথম পত্র থেকে ১২ থেকে ১৩টি প্রশ্ন করা হয়। অধিকাংশ প্রশ্ন করা হয় একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্য বই থেকে। এ অংশে ভালো করার জন্য লেখক ও কবি পরিচিতি, তাঁদের রচনাবলি সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে হবে।
১২ থেকে ১৩টি প্রশ্ন করা হয় ব্যাকরণ ও শব্দভিত্তিক অংশ থেকে। ব্যাকরণ অংশের জন্য মুনীর চৌধুরী রচিত নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড নির্ধারিত ব্যাকরণ বই অনুসরণ করতে হবে।
অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর করার জন্য এ বইয়ের প্রস্তুতিই যথেষ্ট। বাড়তি প্রস্তুতির জন্য অনুসরণ করা যেতে পারে হায়াৎ মামুদ রচিত ভাষা শিক্ষা বইটি। ভালো করার জন্য বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধান করা যেতে পারে। অনেক প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি হয় এ বিষয়ে।
ইংরেজি
অন্য সব বিষয়ের চেয়ে ইংরেজি প্রশ্ন তুলনামূলক কঠিন হয়। স্বভাবতই ইংরেজির পেছনে প্রতিদিন সময় দেওয়াটা জরুরি। মোট ২৫টি প্রশ্নের মধ্যে সাত থেকে আটটি প্রশ্ন করা হয় গ্রামার অংশ থেকে। স্যাট ও টোফেল বই ইংরেজির প্রস্তুতিতে কাজে আসে। গ্রামারের জন্য নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে।
Barron’s Toefel, Clip’s Toefel অনুসরণ করা যেতে পারে। সবচেয়ে বেশি লক্ষ রাখতে হবে vocabulary-ভিত্তিক প্রশ্নের প্রতি। এখান থেকে প্রতিবছর ১২-১৩টি প্রশ্ন থাকে। vocabulary-ভিত্তিক প্রশ্নের মধ্যে analogy অংশটা গুরুত্বপূর্ণ। সিনোনিম, অ্যান্টোনিম, অ্যানালজি থেকে আসে প্রশ্ন। vocabulary-র জন্য বাজারের ভালো মানের একটি বই অনুসরণ করলেই চলবে। comprehension অংশে ভালো করার জন্য প্রতিদিন ইংরেজি পত্রিকা পড়া যেতে পারে।
হিসাববিজ্ঞান
প্রতিবছর সাত থেকে আটটি প্রশ্ন আসে অঙ্কের ওপর। অঙ্কে ভালো করার জন্য নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। মুখস্থ রাখতে হবে সূত্রগুলো।
অ্যাকাউন্টিংয়ে অঙ্কের চেয়ে তত্ত্বের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ ২৫টির মধ্যে দেখা যায় ১৮-২০টি প্রশ্ন থাকে তত্ত্বীয় অংশ থেকে। তবে না বুঝে তত্ত্ব মুখস্থ করলে খুব বেশি কাজে দেবে না; বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। তাত্ত্বিক অংশের প্রস্তুতির জন্য হিসাববিজ্ঞানের বিভিন্ন মৌলিক বিষয় আয়ত্তে আনতে হবে। মূল বিষয়গুলো পড়ার পাশাপাশি বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধান পড়লে তা কাজে দেবে। প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি হয়ে থাকে। তাই বিগত ১৮-২০ বছরের প্রশ্ন ভালোভাবে পড়তে পারলে অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর করা যাবে। প্রায় সব প্রশ্নই পাঠ্য বই থেকে করা হয়, তাই পাঠ্য বইয়ের খুঁটিনাটি দখলে রাখতে হবে।
ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ
ভালো করার জন্য বইয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়তে হবে, যাতে বিভিন্ন কাঠামো মনে রাখা যায়। অধিকাংশ প্রশ্ন করা হয় মূল বই থেকে। মূল বই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়তে হবে।
প্রস্তুতির জন্য যেকোনো লেখকের বই অনুসরণ করলেই চলবে।
প্রতিবছর তিন থেকে চারটি প্রশ্ন করা হয় সাম্প্রতিক সময়ের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর। এসব প্রশ্নের উত্তর করার জন্য পরীক্ষার দু-তিন মাস আগে থেকে দৈনিক পত্রিকার অর্থনীতি ও বাণিজ্যবিষয়ক সংবাদ ভালোভাবে দেখতে হবে।
ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি সহজ মনে করে অনেকে এর পেছনে কম সময় ব্যয় করে। এটা এক ধরনের বোকামি। অন্য অংশের মতো এখানেও মনোযোগী হলে পুরো নম্বর তোলা সম্ভব।