উটের দুধ! তাও আবার প্যাকেটজাত হয়ে। হ্যা, দারুণ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ উটের দুধ পাওয়া যাবে বাজারে। শিগগিরই প্যাকেটজাত উটের দুধ বাজারজাত করতে যাচ্ছে ভারত। বলা হয়, উটের দুধে গরুর দুধের চেয়ে ভিটামিন ‘সি’র পরিমাণ তিনগুণ বেশি। আর আয়রণের পরিমাণ গরুর দুধের চেয়ে দশগুণ। তাই ‘সুপারফুড’ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বহু পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উটের দুধ। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের অঞ্চলে উটের দুধ আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে উটের দুধ ঘিরে ব্যাপক বাণিজ্য তৈরি হয়েছে।
ভারতের নির্দিষ্ট কয়েকটি অঞ্চলে উটের দুধ উৎপাদন ও বিক্রি হলেও, দেশটির ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাসোসিয়েশন (এফএসএসএআই) ভারতজুড়ে এ দুধ বিক্রির মানদণ্ড নির্ধারণের চিন্তা করছে।
জয়পুরের বিকানারের ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অন ক্যামেল (এনআরসিসি) উটের দুধ এবং দুধ থেকে তৈরি খাদ্যপণ্য (মাখন, ঘি, পনির, আইসক্রিম) বাজারজাত করে থাকে। এ রিসার্চ সেন্টারের হিসেব অনুযায়ী, ২০১০-১১ অর্থ বছরে তাদের বিক্রয়কেন্দ্র থেকে প্রায় তিন লাখ রুপির উটের দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য বিক্রি হয়েছে।
স্থানীয় উট উৎপাদকেরা আশা প্রকাশ করে বলেন, উটের দুধ ও দুধ থেকে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে জীবিকা অর্জন আরো সমৃদ্ধ করা সম্ভব। স্থানীয় ও সামাজিক কিছু প্রতিষ্ঠান দুধ ও দুধ থেকে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ক্যামেল চ্যারিসমা নামে এমন একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ২০১০ সালে গড়ে ওঠে। যারা উট উৎপাদন করেন, আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করাই প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য।
এছাড়া উট উৎপাদন ও দুধ বিক্রির ক্ষেত্রে উপযোগী মানদণ্ড তৈরির জন্য এফএসএসএআইকে অনুরোধ জানিয়ে আসছে পশুপালন, ডেয়রি ও ফিশারিজ বিভাগ। ইতোমধ্যে উটের দুধ উৎপাদন ও বিপণনের জন্য ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
তবে, ভারতজুড়ে উটের দুধ সহজলভ্য করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি দক্ষ দল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে এফএসএসএআই। প্রতিষ্ঠানটি থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেলে গুজরাট ও রাজস্থান একত্রে বাণিজ্যিকভাবে উটের দুধ উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করবে।
প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে কাজ করবে গুজরাট কো অপারেটিভ মিল্ক মার্কেটিং ফেডারেশন (জিসিএমএমএফ)। আগামী ছয় মাসের মধ্যে কুচে উটের দুধের উৎপাদন শুরু করার আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর আহমেদাবাদ থেকে এর বাজারজাতকরণের আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে গুজরাট সরকার এক কোটি রুপি বরাদ্দের কথা জানিয়েছে।