প্রচ্ছদ > পরিবহন > ট্রেন সার্ভিস > ট্রেনের তথ্য মিলছে স্কাউট ডেস্কে
ট্রেনের তথ্য মিলছে স্কাউট ডেস্কে

ট্রেনের তথ্য মিলছে স্কাউট ডেস্কে

কোন ট্রেন কখন ছাড়বে, কোনটি কত নম্বর প্লাটফরমে থেমেছে; এসব যাত্রীদের বুঝিয়ে দিচ্ছিল মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র হৃদয় হোসেন। একের পর এক যাত্রী। প্রশ্নের পর প্রশ্ন। তাতে একটুও বিরক্ত হতে দেখা গেল না হৃদয়কে। তাঁদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলছিল হৃদয়।
ট্রেনটা ঠিক কত নম্বর প্লাটফরমে থেমেছে, এক বয়স্ক যাত্রীকে তা বুঝিয়ে দিতে একবার ডেস্ক ছেড়ে ছুটতেও হলো তাকে।
হৃদয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দুদিন আগে থেকে শুরু হয়েছে তাদের এই স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মযজ্ঞ। চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।
হৃদয় একজন স্কাউট। তার সঙ্গে এ বছর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কাজ করছে আরও ৩৮ জন স্কাউট ও গার্ল গাইড। ওরা তিনটি পালায় যাত্রীদের তথ্যসেবা দিচ্ছে। কখন কোন ট্রেন আসবে, কোন ট্রেন কতটা দেরিতে আছে, কোনটি কোন প্লাটফরমে থামবে, এসব তথ্যই মিলছে স্কাউটদের তথ্য ডেস্কে। যাত্রীদের সবাইকে খুশিমনে সাহায্য করার চেষ্টা করছে ওরা।

হৃদয় হোসেন বলে, ‘প্রতিবছরই ঈদের সময় আমরা রেলস্টেশনে দায়িত্ব পালন করি। আগে টিকিট চেক করতে হতো। এবার আমরা তথ্য দিয়ে সাহায্য করছি। পাশাপাশি বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধীদের ট্রেনে উঠতেও সাহায্য করছি।’
অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী হ্যাপি শিকদার জানায়, দায়িত্ব নিয়ে যেকোনো কাজ করতে পারলেই ভালো লাগে তার। এবারের কাজটা করে সে ভীষণ আনন্দ পাচ্ছে।
নবম শ্রেণির ছাত্রী সোমা আক্তার, সাবরিনা পারভিনও জানায় স্টেশনে ব্যস্ত সময় কাটালেও, এ সময়টা তারা খুব উপভোগ করে।
কথার ফাঁকেই এম এ ইসলাম নামের এক বৃদ্ধকে হৃদয় রেলের অনুসন্ধান কেন্দ্রে নিয়ে গেল। সাবরিনাকে দেখা গেল ট্রেনের সময়সূচি, কতটা বিলম্বে আছে, কোন প্লাটফরমে থামছে লিখে রাখতে। যাত্রীরা ওদের সেবায় বেশ খুশি। হাসিমুখে কথা বলছেন সবাই।
কেউ কেউ আবার খেপেও উঠছেন। আবু ইউসুফ জানতে এসেছিলেন উপকূল কয়টায়, কত নম্বর প্লাটফরমে আসবে। উপকূল তখনও প্লাটফরমে আসেনি। কখন আসবে, সে খবরও রেল কর্তৃপক্ষ তখনো ওদের দেয়নি। দরকারি তথ্য দিতে না পেরে হৃদয় কিছুটা অপ্রস্তুত, ওর বন্ধুদেরও মন খারাপ। আর আবু ইউসুফ হতাশ।
স্কাউটদের সামনে দাঁড়িয়েই পেশায় আইনজীবী আবু ইউসুফ বললেন, ‘বলতে তো পারলা না, তাইলে আর কী হইল। রাখো আমার কাছে স্টেশন মাস্টারের নাম্বার আছে। আমি ঠিকই বের করে ফেলব।’
স্কাউটদের মতো এবার স্টেশনে রেলওয়ে হাসপাতালের কর্মীদের তত্পরতাও চোখে পড়েছে। হাসপাতালের চিকিত্সা কর্মকর্তা ও চিকিত্সা সহকারীরা স্টেশনে রোগীদের চিকিত্সা-সেবা দিচ্ছেন। মিজানুর রহমান নামের একজন স্বাস্থ্য সহকারী জানালেন, তাঁরা বিনা মূল্যে রোগীদের চিকিত্সা-সেবা দিচ্ছেন। তাঁরা রক্তচাপ মাপছেন, বমি, জ্বর, ডায়রিয়ার ওষুধ দিচ্ছেন।

Comments

comments

Comments are closed.