কোনো গেইমে শত্রুর চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে পেছন থেকে হঠাৎ আঘাত হানার যে আনন্দ, তা একজন গেইমারই বোঝেন। এ ধরনের একটি গেইম ‘ডিউস ইএক্স’ সিরিজের তৃতীয় পর্ব ‘হিউম্যান রেভল্যুশন’। প্রথম পর্বের ২৫ বছর পর, অর্থাৎ ২০২৭ সালের পটভূমিতে গেইমের কাহিনী এগিয়ে গেছে। জৈবপ্রযুক্তিপণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান স্যারিফ ইন্ডাস্ট্রিজের নবনিযুক্ত পরিচালক অ্যাডাম জেনসেন। তাঁর প্রেমিকা এমন এক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা মানুষকে সহজেই উদ্দীপ্ত করতে পারে। এ সময় স্যারিফে আঘাত হানে একদল ভাড়াটে খুনি। এদের হাত থেকে প্রেমিকাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হন অ্যাডাম। প্রেমিকার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করেই অ্যাডামকে বাঁচানো হলো।
নতুন জীবনের পাশাপাশি অ্যাডাম পেল বিশেষ ক্ষমতাও। অ্যাডামকেই এই হামলার তদন্তে পাঠানো হলো। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তে অ্যাডাম বুঝতে পারলেন এ সব কিছুর জন্য দায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক স্যারিফ নিজেই! দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সহকর্মী মেগান রিডের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে অ্যাডাম জানতে পারলেন অপহরণ করা হয়েছে তাঁকে।
অপহরণকারীর পরিচয় বের করতে গিয়ে বেরিয়ে এলো আরেক রোমহর্ষক তথ্য : পৃথিবীর সব মানুষকে উন্মাদ বানানোর খেলায় মেতেছে হুগ ড্যারো। তাঁকে রোখাই এখন অ্যাডামের প্রধান কাজ। এভাবেই এগিয়ে গেছে কাহিনী। গেইমটিজুড়ে রয়েছে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর স্বাদ। তবে গেইমটির সাড়াজাগানোর মূল অস্ত্র হিসেবে কাজ করেছে এর চমৎকার কাহিনী ও উপভোগ্য গেইমপ্লে।
গেইমপ্লের কথা বলতে গেলে শুরুতেই আসে এ পর্বের নতুন সংযোজন হ্যাকিংয়ের কথা। আপনি শত্রুপক্ষের কম্পিউটারকে হ্যাক করে জেনে নিতে পারবেন তাঁদের অনেক তথ্য। হ্যাক করে খুলতে পারবেন যেকোনো বন্ধ দরজা। ‘নিউক ভাইরাস’, ‘স্লো ওয়ার্ম’ ইত্যাদি হ্যাকিংয়ে আপনাকে সাহায্য করবে। কথোপকথনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা গেইমপ্লে গেইমটিকে যথষ্টে আকর্ষণীয় করেছে। যেমন- শত্রুকে হত্যার সময় কতগুলো প্রলাপ শোনা যাবে। শত্রুর এসব প্রলাপ শুনে আপনাকে বুঝে নিতে হবে অনেক জরুরি তথ্য। এখানেই শেষ নয়। প্রত্যেকটি ‘স্টিলথ কিল’-এর পর পাবেন ‘প্র্যাক্টস পয়েন্ট’, যা দিয়ে সচল করতে পারবেন বিশেষ ক্ষমতা। এর মধ্যে আছে শত্রুর অবস্থান খুঁজে বের করা, অদৃশ্য হওয়া, ঘুষি দিয়ে দেয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া, বিরাট উঁচু বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে পড়া ইত্যাদি।
গেইমের কাহিনী অনেকটাই নির্ভর করবে আপনার নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ডের ওপর। নতুনভাবে ডিজাইন করা ক্রিস্টাল ডায়নামিক ইঞ্জিন আপনাকে দেবে ইচ্ছেমতো গেইমের গতি নিয়ন্ত্রণ করার স্বাধীনতা। সাধারণভাবে ফার্স্ট পারসন শ্যুটার ধরনের হলেও মই বেয়ে ওঠা, লড়াই করা ইত্যাদি সময়ে গেইমের ভিউ থার্ড পারসন শ্যুটারের মতো পরিবর্তিত হয়ে যাবে। ভবিষ্যতের পৃথিবীকে ফুটিয়ে তোলার জন্য আলোর কারসাজি করা হয়েছে। হলদেটে নিয়ন রঙের পরিবেশ কাহিনীর সঙ্গে চমৎকারভাবে মিলে গেছে তো বটেই, তৈরি করেছে বিষণ্ন এক আবহ। গেইমে চরিত্রের সংখ্যা অনেক। প্রায় সব চরিত্রকেই বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। গেইমের শব্দের মানও বেশ ভালো।
খেলতে যা লাগবে
* ইন্টেল কোর ডুয়াল কোর ২.০ গিগাহার্জ প্রসেসর
* এক্সপির জন্য ১ গিগাবাইট/ভিস্তা বা সেভেনের জন্য ২ গিগাবাইট RAM
* এনভিডিয়া জিফোর্স ৮ সিরিজ গ্রাফিকস কার্ড
* হার্ডডিস্কে ৮.৫ গিগাবাইট খালি জায়গা