শুরু হতে যাচ্ছে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ২০১৪। এবারের বিশ্বকাপ আসর সুন্দরভাবে আয়োজনের চেষ্টার কোনো কমতি রাখছে না আয়োজক ফিফা ও স্বাগতিক দেশ ব্রাজিল। নতুন প্রযুক্তিও সংযোজন করা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ২০১৪-এ যেসব প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে তা তুলে ধরেছে গার্ডিয়ান
২০১৪ সালের বিশ্বকাপ আসরের শুরুতেই থাকছে প্রযুক্তি। বিশ্বকাপ ফুটবলে প্রথম কিকটিই করবেন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী কিশোর। তার কিকের মাধ্যমেই শুরু হবে বিশ্বকাপ আসর। কিন্তু কীভাবে কিক করবেন তিনি? এজন্য এগিয়ে এসেছে ব্রাজিল সরকার এবং বিশ্বের বিখ্যাত নিউরোসায়েন্টিস্টরা। তিনি যাতে সঠিকভাবে শুধু মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তির সাহায্যে কিক করতে পারেন সেজন্য বিশেষভাবে নির্মাণ করা হয়েছে এক্সো-স্কেলেটন বা কৃত্রিম কংকাল। এটি নির্মাণে থ্রিডি প্রিন্টারেরও সাহায্য নেয়া হয়েছে। কৃত্রিম এ কংকালটি কিশোরকে উঠে দাঁড়াতে এবং তার মস্তিষ্কের চিন্তা অনুসারে কিক করতে সহায়তা করবে। প্রকল্পটির প্রধান ব্রাজিলিয়ান নিউরোসায়েন্টিস্ট মিগুয়েল নিকোলেলিস বলেছেন, “এই কিক নিউরোসায়েন্সে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।”
এ ছাড়াও আরো অনেক উন্নত-প্রযুক্তি ডিভাইস থাকছে বিশ্বকাপে। এমনকি বিশ্বকাপ ফুটবলেও ব্যবহার করা হয়েছে অ্যারোডায়ানামিক প্রযুক্তি। সেন্সর সমৃদ্ধ ব্রাজুকা ফুটবলটি গোললাইন অতিক্রমের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবে। এ ছাড়াও এ সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে খেলোয়ারকে ট্র্যাক করতে পারবে এবং ম্যাচে তাদের পারফরমেন্স বিশ্লেষণ করতে পারবে।
ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৪ ফুটবল ব্রাজুকা নির্মাণেও সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। ব্রাজুকাকে এমনভাবে সেলাই করা হয়েছে যাতে বলটি বাতাসের বেগে আলোড়িত হবে, কিন্তু পেছনে কোনো ‘ওয়েক’ সৃষ্টি হবে না।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান প্রোজন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলাগুলোতে খেলায়ারদের পারফরমেন্স বিশ্লেষণ করে থাকে। বিশ্বকাপ ফুটবলে এই প্রযুক্তি সংযোজনের প্রসঙ্গে প্রজোনের ডেটা বিজ্ঞানী ওমর চৌধুরী বলেছেন, “এ যাবত যত বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছে তার মধ্যে এ বিশ্বকাপেই সবচেয়ে বেশি বাস্তবমুখী প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, ফুটবল দক্ষতা অবশ্যই মূল ভূমিকা পালন করবে, কিন্তু পাশাপাশি যেসব দেশ এ প্রযুক্তি ব্যবহারে করতে পারছে না তারা এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজেদের পারফরমেন্সে ঘাটতি ধরতে পারবে।
ফিফা এবারের বিশ্বকাপে মূল যে প্রযুক্তিটি যোগ করেছে তা হলো গোললাইন টেকনোলজি। জার্মানির প্রতিষ্ঠান গোলকন্ট্রোল এ জন্য ক্যামেরা সেবা দেবে বলেই জানিয়েছে গার্ডিয়ান। বল গোললাইন পার হলেই তা ক্যামেরায় ধরা পড়বে এ প্রযুক্তির ফলে। এ প্রযুক্তি প্রসঙ্গে গোলকন্ট্রোলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডার্ক ব্রোখাহাউসেন বলেছেন, “বিশেষভাবে লক্ষণীয় নমনীয়তা এবং যথার্থতাই আমাদের সিস্টেমটির অসাধারণ ফিচার।”