প্রচ্ছদ > কেনাকাটা > বাজারদর > মোটরবাইকের বাজারদর
মোটরবাইকের বাজারদর

মোটরবাইকের বাজারদর

ট্রাফিক জ্যামের শহর ঢাকায় আপনার সময় আর খরচ দুটোই বাঁচাবে মোটরবাইক। যদি মোটরবাইক কেনার সিদ্ধান্ত নেন, সে ক্ষেত্রে আগেভাগেই জেনে নিতে পারেন এই বাহনের দরদাম। বাজার ঘুরে বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও মডেলের বাইকের দাম জানাচ্ছেন সাইমুম সাদ

এক জায়গায় হরেক ব্র্যান্ডের মোটরবাইক পেতে যেতে পারেন ঢাকার ইস্কাটন, কাকরাইল বা মগবাজারে। এখানে মূলত ডিলাররা মোটরবাইক বিক্রি করেন। শোরুমের চেয়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা কমে এখানে বাইক পাওয়া যায়। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকেও সরাসরি বাইক কেনা যায়।

বাজাজ
ভারতে তৈরি মোটরবাইক ‘বাজাজ’ বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। বাজাজ আমদানি করে এ দেশে বাজারজাত করছে উত্তরা মোটরস। রাজধানী ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে উত্তরা মোটরসের শোরুম। বাজাজের ‘ডিসকভার’ মডেলের ১২৫ সিসির দাম এক লাখ ৫৮ হাজার, ১২৫ সিসি এসটির দাম এক লাখ ৭৫ হাজার ও ১০০ সিসির দাম এক লাখ ৩৯ হাজার ৯০০ টাকা। বাজাজের রয়েছে আরেকটি মডেল ‘প্লাটিনা’। এর ১০০ সিসির দাম এক লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা। আরেকটু বেশি স্টাইলিশ মডেল নিতে চাইলে কিনতে পারেন ‘পালসার’। এটির ১৫০ সিসির দাম এক লাখ ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা। আর ১৩৫ সিসির দাম পড়বে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা।

ইয়ামাহা
বিশ্বের আরেক খ্যাতনামা মোটরবাইক ব্র্যান্ড ‘ইয়ামাহা’। বাংলাদেশে ইয়ামাহার একাধিক ডিলার রয়েছে। এর একটি নিউ ইস্কাটনের ‘গোল্ডেন লিবার্টি’। এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, ‘বাজারে ইয়ামাহার চাহিদা প্রচুর। ইয়ামাহার এফজেড-এস ও ফ্রেজারের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। তবে সবচেয়ে দাম বেশি ‘আর১৫ ভার্সন২’ মডেলের। এর দাম চার লাখ ৯০ হাজার। আর ফ্রেজার ১৫৩ সিসির বাইকটির দাম দুই লাখ ৫৭ হাজার টাকা। একটু কমের মধ্যে কিনতে চাইলে আছে এফজেড-এস ১৫৩ সিসির বাইকটি। দাম দুই লাখ ৪২ হাজার টাকা।

টিভিএস
ভারতের টিভিএসের মোটরবাইকগুলো বাংলাদেশে আমদানি করে ‘টিভিএস অটো বাংলাদেশ’। এদের বেশ কয়েকটি ডিলার রয়েছে। টিভিএসের অনুমোদিত একটি ডিলার ইস্কাটনের ‘ইউনিভার্স মটরস’। এখানে আছে টিভিএসের বিভিন্ন মডেলের মোটরবাইক। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান সোহাগ জানান, ‘টিভিএসের ‘অ্যাপাচি আরটিআর’ মডেলের বিক্রিই বেশি। অ্যাপাচি আরটিআর আবার দুই ধরনের। একটি ‘সিঙ্গেল ডিস্ক’, আরেকটি ‘ডাবল ডিস্ক’। সিঙ্গেল ডিস্কের দাম এক লাখ ৯৯ হাজার টাকা। আর ডাবল ডিস্কের দাম দুই লাখ ১৭ হাজার টাকা। কম দামের টিভিএসের মধ্যে আরো পাবেন মেট্রো ১০০ সিসি (সেলফ স্টার্টারসহ) এক লাখ ২৯ হাজার ৯০০ টাকায়। সেলফ স্টার্টার ছাড়া এক লাখ ১৬ হাজার ৯০০ টাকা। এ ছাড়া টিভিএসের আরেক জনপ্রিয় মডেল ১২৫ সিসির ‘ফনিক্স’। দাম এক লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

হোন্ডা
হোন্ডার ড্রিম নিউয়ের দাম পড়বে এক লাখ ৪২ হাজার টাকা। আর শাইনের দাম এক লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

ওয়ালটন
মোটরবাইক তৈরির দেশি ব্র্যান্ড ‘ওয়ালটন’। দাম নাগালের মধ্যে হওয়ায় এর চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। আজিমপুরের ওয়ালটন প্লাজার বিক্রয় ব্যবস্থাপক রকিবুল ইসলাম জানান, ‘ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন মডেলের বাইক বাজারে আনে ওয়ালটন।’ তাদের ১০০ সিসির ‘ক্রুজ’ বাইকের দাম পড়বে ৮৩ হাজার টাকা। আরেকটু দামি নিতে চাইলে ১০০ সিসির ‘স্টাইলেক্স’ নিতে পারেন। দাম পড়বে ৮৫ হাজার। ওয়ালটনের সবচেয়ে কম দামের মডেল হলো ৯০ সিসির ‘লিও’, দাম ৭৪ হাজার। দাম বেশি হলেও ১২৫ সিসির ‘ফিউশন’ ইদানীং ভালোই চলছে। এর দাম ৯৬ হাজার। ফিউশন সিরিজের ১১০ সিসিও মন্দ নয়। দাম ৮৬ হাজার। তবে ওয়ালটনের সবচেয়ে দামি বাইক ১৪০ সিসির ‘এক্সপ্লোর’। এর দাম এক লাখ ৩০ হাজার টাকা।

রানার
২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশে মোটরবাইক উৎপাদন করছে ‘রানার’। তাদের সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা দিনপ্রতি ৫০০। ডিলারের সংখ্যা ২০০, আর বিক্রয়কেন্দ্র আছে ৪০০টি। এদের মোটরবাইকগুলো জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরি। দাম কম হওয়ায় মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের কাছে বাইকগুলো বেশ জনপ্রিয়। ডেইয়াং রানার, ফ্রিডম রানার ও এলএমএল ফ্রিডম- এই তিন ব্র্যান্ডের মোটরবাইক তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। ডেইয়াংয়ের এডি৮০এসের (স্পোক) দাম ৭৮ হাজার, এডি৮০এসের (অ্যালোয়) ৮০ হাজার, অ্যাপোলোর ৮৯ হাজার, বুলেট ১২৫ সিসি এক লাখ ২৫ হাজার ও বুলেটের ১৩৫ সিসির দাম এক লাখ ৩০ হাজার টাকা।
ফ্রিডম রানারের এফ ১০০ সিসির দাম ৮৫ হাজার, রয়েল ইএসের ৯৫ হাজার আর রয়েল কেএসের দাম ৯০ হাজার টাকা। এলএসএল ফ্রিডম ১০৯ সিসির দাম এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

সিঙ্গার
সাধ্যের মধ্যেই ক্রেতাদের হাতে মোটরবাইক তুলে দিচ্ছে সিঙ্গার। বাজারে সিঙ্গারের দুটো ব্র্যান্ড পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে ১২৫ সিসির এসএম মডেলের দাম ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা। আর এসএম ১০০ সিসির দাম ৬৫ হাজার টাকা। দেশব্যাপী সিঙ্গারের শোরুমগুলোতে এগুলো সহজ কিস্তিতে কেনা যাবে।

ইমা
ইমার দামও খুব একটা বেশি নয়। এইচএস ১০০-২ মডেলের দাম ৮৪ হাজার টাকা। আরেকটু দামি এলএক্স-১০০ মডেলটি, দাম ৯৩ হাজার টাকা। তবে এলএক্স-৮০ও মন্দ নয়, দাম ৭৩ হাজার টাকা। দেশব্যাপী ইমা তাদের ৩৩টি শোরুমে এসব মোটরবাইক বিক্রি করে।

আরো আছে চীনা মোটরবাইক
যাঁদের বাজেট কম, তাঁদের পছন্দের তালিকায় আছে চীনা মোটরবাইক। এসবের মধ্যে আছে জংসেন মোটরবাইক। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান রূপসা ট্রেডিং জংসেনের বাইকগুলো আমদানি করে বাজারজাত করছে। দামও অনেকটাই নাগালের ভেতরে জংসেন জেডএস-১০০-৪ (হাইড্রোলিকসহ) নিলে দাম পড়বে ৮৫ হাজার টাকা, জেডএস ১০০ মডেলে দাম আরেকটু কম, ৭৫ হাজার টাকা। জেডএস-৫০ মডেলের দাম ৭২ হাজার টাকা। অন্যদিকে জংসেন জেডএস-১০০ নিতে চাইলে ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা লাগবে। জংসেন ছাড়া লিফানের বাইকও ভালো চলছে। এর কেপি-১৫০ মডেলের দাম এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

Comments

comments

Comments are closed.