প্রচ্ছদ > কেনাকাটা > ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিন
ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিন

ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিন

কোরবানির ঈদে ফ্রিজ কেনার ধুম পড়ে যায়। মানুষ মাংশ ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণের প্রয়োজনেই অবশ্য ফ্রিজ কিনেন। ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিন ফ্রিজের খুঁটিনাটি, দরদাম ও জরুরি কিছু বিষয়।

ফ্রিজের আকার
ফ্রিজ বড় কিনবেন না ছোট- এর পেছনে অনেক বিষয় বিবেচনা করতে হয়। পরিবারের সদস্য সংখ্যা, বাজার করার অভ্যাস, খাবার সংরক্ষণের মাত্রা ইত্যাদি। আন্তর্জাতিক বাজারে ফ্রিজের মাপ হয় লিটারে। যে কারণে প্রায় সব দোকানেই ফ্রিজের গায়ে মাপ দেওয়া লিটারে। এক সিএফটি মানে হল ২৮.৩২ লিটার। মানুষ বছরের পর বছর ব্যবহার করার জন্যই ফ্রিজ কেনেন, তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একটু বড় কেনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। গড়পড়তা হিসেবে দুই থেকে তিনজন সদস্যের একটি পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ ২০০ লিটারের একটা ফ্রিজ যথেষ্ট। চার থেকে ছয়জন সদস্য হলে ৩৫০ লিটার পর্যন্ত ফ্রিজ পর্যাপ্ত। আর সদস্য সংখ্যা আরও বেশি হলে ৬০০ লিটারের ফ্রিজেও যাওয়া যায়।

ফ্রস্ট নাকি নন-ফ্রস্ট
‘ফ্রস্ট’য়ে বরফ জমে, খাবারও জমে যায়। ‘নন-ফ্রস্ট’য়ের খাবার তো দূরের কথা ফ্রিজেই কোনো বরফ জমে না। ‘ফ্রস্ট’ ধরনের ফ্রিজে বিদ্যুত খরচ সামান্য কম হয়। ভেতরে বরফ জমে থাকার কারণে বিদ্যুত না থাকলে ভেতরের খাবার ৪-৫ ঘণ্টা ভালো থাকে। তবে এর কারণে খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে তা বের করে রাখতে হবে এবং মাসে একবার বরফ পরিষ্কার করতে হয়। অন্যথায় বরফ জমে ভেতরের জায়গা কমে যাবে। ‘নন-ফ্রস্ট’য়ের ক্ষেত্রে এই ঝামেলা নেই। আর বিদ্যুত খরচের পার্থক্যটা খুবই সামান্য।

ইনভার্টার নাকি নন ইনভার্টার
একটা ফ্রিজের মুল যন্ত্র হল কম্প্রেসার। ‘ইনভার্টার’ ফ্রিজের কম্প্রেসার কখনও বন্ধ হয়না আর ‘নন-ইনভার্টার’ ফ্রিজের কম্প্রেসার ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা অনুযায়ী সয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয় আবার বন্ধ হয়। আর এই কারণেই ‘নন-ইনভার্টার’য়ের বিদ্যুত খরচ বেশি হয়। আবার ‘নন-ইনভার্টার’য়ের সঙ্গে ‘ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার’ কিনতে হয় আলাদাভাবে। ‘ইনভার্টার’ ফ্রিজের দাম বেশি হলেও বিদ্যুত খরচ আর ‘ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার’য়ের দিক দিয়ে চিন্তা করলে বেশ সাশ্রয়ী।

গ্যাস কোনটি ব্যবহার হয়েছে?
ফ্রিজের গ্যাস হলো মানবদেহের রক্তের মতো। গ্যাস ভালোমানের না হলে ঠাণ্ডা হওয়া, বিদ্যুত খরচ, স্থায়িত্ব সবটাতেই গোলমাল বাঁধবে। প্রধানত দুই ধরনের গ্যাসে চলে ফ্রিজ, ‘আর৬০০এ’ এবং ‘আর১৩৪এ’। ‘আর৬০০এ’ গ্যাসটি থাকলে ফ্রিজ দ্রুত ঠাণ্ডা হয়, ফলে বিদ্যুত খরচে সাশ্রয়ি হয়। ‘আর১৩৪এ’ গ্যাসটি ঠিক তার উল্টো। পুরানো ফ্রিজের গ্যাস ফুরিয়ে গেলেও ‘আর৬০০এ’ গ্যাসটি ফ্রিজে দেওয়া যেতে পারে।

কপার না অ্যালুমিনিয়াম?
কন্ডেনসার পাইপের দুই ধাতুর হয়, কপার এবং অ্যালুমিনিয়াম। ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা বাইরে ছেড়ে দেওয়ার পথ হল এই ‘কন্ডেনসার পাইপ’। কপারের তৈরি কন্ডেনসার পাইপের তাপ পরিবাহিতা বেশি ভালো এবং দীর্ঘস্থায়ী, লিক হওয়ার আশঙ্কা থাকে কম। অ্যালুমিনিয়ামের ‘কন্ডেনসার’ পাইপ এসব দিক থেকে দুর্বল। যে কারণে অ্যালুমিনিয়ামের ‘কন্ডেনসার পাইপ’ যুক্ত ফ্রিজের বিদ্যুত খরচ হয় বেশি।

ডিপ নিচে না ওপরে?
ডিপ নিচে বা ওপরে থাকার বিশেষ কোনো উপকারিতা নেই। তবে ডিপ নিচে হলে হিমায়ীত মাছ বা মাংসের পোটলা পায়ের ওপর পড়ে দুর্ঘটনা হওয়া সম্ভাবনা কম। আবার ডিপ ফ্রিজের ওজন বেশি হয়, তাই তা নিচে হলে ফ্রিজ শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। ডিপ ওপরে হলে ফ্রিজের ওপরের দিকে স্যাঁতসেঁতে ভাব থাকে, ফলে ফ্রিজের ওপরে কিছু রাখলে সেটা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ব্রান্ড ও শোরুম
দেশি ব্রান্ডের মধ্যে ওয়ালটন, সিংগার, বাটারফ্লাই, ইকো প্লাস, কনকা ইত্যাদি সুপরিচিত। বিদেশি ব্রান্ডের মধ্যে আছে ওয়ার্লপুল, হিটাচি, হাইয়ার, এলজি, স্যামসাং, শার্প ইত্যাদি। এসব ব্রান্ডের নিজস্ব শোরুম তো আছেই, পাশাপাশি ডিলারদেরও আলাদা শোরুম থাকে। যেমন এলজি বাটারফ্লাই’য়ের শোরুম কথাই ধরা যায়। দেশের সব এলাকাতেই ফ্রিজের শো রুম আছে।

আরও কিছু জরুরি বিষয়
বৈদ্যুতিক সংযোগে ‘ভোল্টেজ’য়ের কমবেশি হয়। তাই ‘ভোল্টেল স্ট্যাবিলাইজার’ রাখতে হবে ‘অন ডিলে মোড’য়ে। এতে হুট করে ‘ভোল্টেজ’ কম কিংবা বেড়ে গেলে তা ফ্রিজের ওপর সরাসরি ও তৎক্ষণাত প্রভাব ফেলতে পারবে না। ফ্রিজের প্লাগটা যে সকেটে লাগানো হবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে শক্ত হয়ে লেগে থাকে, হালকা টানে যাতে তা খুলে আনা না যায়। এতে বৈদ্যুতিক সংযোগ নিরাপদ হবে।

জেনে নিন দরদাম
ব্র্যান্ড ও আকারভেদে সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকায় ওয়ালটনের ছয় সিএফটি’য়ের একটা নন ফ্রস্ট, নন ইনভার্টার ফ্রিজ পাওয়া সম্ভব। আর ওপরের দিকে চার লাখ টাকার ফ্রিজও চোখে পড়বে দোকানগুলোতে। গ্লাস ডোর, ওয়াটার ডিস্পেনসার, চার পাল্লা, ছয় পাল্লা, টাচ প্যানেল, ফ্রিজের দরজার মাঝে ছোট আকারের একটা পানীয় ফ্রিজ ইত্যাদি নানান মজার সব সুবিধা দেখা যাবে দামি ওই ফ্রিজগুলোতে।

নানা অফার, ইএমআই, মূল্যছাড়
রাজধানীতে এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শোরুমে চলছে স্ক্র্যাচ কার্ড’য়ের অফার যেখানে একজন ক্রেতা ২ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ মূল্যছাড় পেতে পারেন। কিস্তিতে ফ্রিজ কেনার সুযোগও আছে সবখানেই। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ০ শতাংশ ‘ইএমআই’ পাওয়া যাবে নুন্যতম ছয় মাস। ১২ মাসের ০ শতাংশ ‘ইএমআই’ হাতে গোনা কিছু ব্যাংকের কার্ডে পাওয়া যাচ্ছে।

Comments

comments

Comments are closed.