বাজারে রয়েছে হরেক রকমের রান্নার সরঞ্জাম। ভাত রান্নার জন্য আছে রাইস কুকার, মাংসের জন্য প্রেশার কুকার, খাবার গরম ও রান্নার জন্য ওভেন। রসুইঘরের এসব যন্ত্রপাতি জীবনযাত্রাকে করেছে অনেক সহজ। তাড়াতাড়ি ও সহজে রাঁধতে এসব সরঞ্জামের জুড়ি মেলা ভার। জেনে নিন রান্নায় সহায়ক আধুনিক সব সরঞ্জামের খবর
রাইস কুকার
অল্প সময়ে ভাত রান্নার জন্য নিন রাইস কুকার। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মধ্যে মিয়াকো, নোভা, নোকা, পাইলট, ন্যাশনাল মারকো ইত্যাদি বেশি টেকসই। অধিকাংশই বানায় চীন ও জাপান। মডেল, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এবং আকারভেদে দাম বিভিন্ন। দেড় হাজার থেকে চার হাজার ৫০০ টাকার মধ্যেই মিলবে যেকোনো ব্র্যান্ড। ছোট সাইজের রাইস কুকার ৮০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা।
প্রেশার কুকার
তাপ ও চাপে দ্রুত রেঁধে দেয় প্রেশার কুকার। অ্যালুমিনিয়ামের এই আধুনিক হাঁড়িতে সাধারণত গোশত রান্না করা হয়। এতে রান্না বসিয়ে হাতের কাজটি সহজে সারতে পারবেন। কুকারের সিগন্যালে বুঝতে পারবেন রান্না কতটা এগিয়েছে। বাজারে এক থেকে ছয় লিটার ধারণক্ষমতার প্রেশার কুকার পাবেন। এখন দেশেও তৈরি হয় এই কুকার। এর মধ্যে আছে কিয়াম ও গাজী। দাম ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য প্রেশার কুকারের দাম পড়বে ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা। ভারতের পেস্ট্রিজ ও হকিন্স কম্পানির প্রেশার কুকার কেনা যাবে এক হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।
ওভেন
দ্রুত রান্নার আরেকটি মাধ্যম ওভেন। আছে ইলেকট্রিক ওভেন ও মাইক্রো ওভেন। মাইক্রো ওভেনের তুলনায় ইলেকট্রিক ওভেনের দাম কিছুটা কম। মিয়াকো ব্র্যান্ডের ওভেন ও মাইক্রো ওয়েভ ওভেন দুটিই পাবেন। প্যানাসনিকের মাইক্রো ওভেনের দাম একটু বেশি। নোভেনা কম্পানির ওভেনও পাবেন। ওভেনের দাম দুই হাজার ৭০০ থেকে সাত হাজার টাকা। মাইক্রো ওভেনের দাম ছয় হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ব্লেন্ডার
নানা প্রতিষ্ঠান ব্লেন্ডার তৈরি করছে। দামও বিভিন্ন রকম। এর মধ্যে ওয়ার্লপূল ও ফিলিপস ব্র্যান্ডের ব্লেন্ডারের দাম দুই হাজার ৭০০ থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া আরো বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের ব্লেন্ডার পাবেন আড়াই হাজার থেকে ছয় হাজার টাকার মধ্যে।
জুসার
ফল থেকে রস তৈরির জন্য ব্যবহার করুন জুসার। বাজারে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নানা মডেলের জুসার পাওয়া যাবে। ওয়ার্লপূল জুসারের চাহিদা বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানের জুসারের দাম পড়বে তিন হাজার ৯০০ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
পানির ফিল্টার
সাধারণ ও বৈদ্যুতিক দুই ধরনের ফিল্টার আছে। বৈদ্যুতিক ফিল্টারের সুবিধা হলো, পানি বিশুদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে এতে পানি ঠাণ্ডা ও গরম দুই-ই হয়। সাধারণ ফিল্টার পাবেন এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকায়। আর এর চেয়ে একটু উন্নতমানের ফিল্টারের দাম তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা। এ ছাড়া বৈদ্যুতিক ফিল্টারের দাম আড়াই হাজার থেকে সাত হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রধান পানির লাইনের সংযোগে বসানো ফিল্টারের দাম ২২ হাজার টাকা।
ইলেকট্রিক চুলা
গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে ইলেকট্রিক চুলা। মিয়াকো, নোভা ব্র্যান্ডের ইলেকট্রিক চুলা পাবেন দুই হাজার থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।
চামচ সেট
আছে স্টিল, ইন্ডিয়ান স্টিল সেট, কাটলারি সেট, স্টেইনলেস স্টিলের সেট ও নানা ধরনের বক্স সেট। এ ছাড়া স্টিলের ওপর গোল্ডেন ও সিলভারের কারুকাজ করা চামচ সেটটিও বেশ কাজের। স্টিলের চামচ সেটে সোনালি ও রুপালি রঙের কারুকাজ করা চামচ সেট রয়েছে বেশ কয়েক ধরনের। এ ছাড়া আছে গোল্ডপ্লেট চামচের বক্স সেট। এ সেটগুলো সাধারণত ১২ ও ২৪ পিসের হয়ে থাকে। ইন্ডিয়ান স্টিলের ১২ পিসের চামচ সেট ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, স্টিল ২৪ পিসের চামচ সেট ৬০০ থেকে ১৪০০ টাকা, স্টিল ১২ পিসের চামচ সেট ৪০০ টাকা ও স্টিলের ওপর কাঠ, প্লাস্টিক, সিরামিক দিয়ে তৈরি ২৪ পিসের চামচ সেট ৫৫০ থেকে ৩৫০০ টাকা, স্টিলের স্টেইনসহ ২৪ পিসের চামচ সেট ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। এ ছাড়া ২৪ পিসের গ্লোডপ্লেটের দাম ৩০ হাজার টাকা।
সবজি কাটার
বিভিন্ন ব্র্যান্ড অনুযায়ী সবজি কাটারের বিভিন্নতা রয়েছে। কাটার নাইমার ডিসার হচ্ছে মিয়াকো ব্র্যান্ডের। এটি মালয়েশিয়ার তৈরি। এর দ্বারা স্লাইস ও চিপস করা যায়। তিনটি কনটেইনার বড় এবং তিনটি ছোট। তিনটি ঢাকনা ও তিনটি ব্লেড, সবজি ধোয়ার ছাঁকনি। আরো সবজির খোসা ফেলার জন্য পিলার। দাম ৮৫০ টাকা।
পাকিস্তানের তৈরি সান সালাদ কাটার দেখতে প্লেটের মতো। এটি আলুর চিপস, সালাদ ও চিপস করার জন্য। দাম ৩৫০ টাকা। গ্রেটার কাটার চায়নার তৈরি। বক্সের মতো দেখতে স্টিলের। তিন থেকে পাঁচটি ডিজাইনে পাওয়া যাবে। এর কোনো কোনোটির চার শেপে ডিজাইন করা থাকে আবার কোনো কোনোটি ছয় শেপে। চার শেপের দাম ২৫০-৩০০ টাকা এবং ছয় শেপের দাম ৩০০-৩৫০ টাকা। এটি স্লাইস করার জন্য ব্যবহৃত করা হয়। এসব সবজি কাটার ছাড়াও আলাদা করে সবজির খোসা ফেলার জন্য পাবেন পিলার। দাম ১০০-১২০ টাকা।
ইলেকট্রিক কেটলি
মিয়াকো ব্র্যান্ডের ছোট-বড় পাঁচ থেকে সাতটি মডেলের ইলেকট্রিক কেটলি পাওয়া যায়। এক লিটার প্লাস্টিক বডির দাম ৮০০, ১ দশমিক ২ লিটারের দাম ৯৫০, ১ দশমিক ৮ লিটারের দাম ১০০০, দুই লিটার প্লাস্টিকের দাম ১০৫০ টাকা। ১ দশমিক ৮ লিটার স্টিল বডির দাম ১৬০০ এবং চার লিটারের স্টিল বডি মিয়াকো অটোমেটিক ইলেকট্রিক কেটলির দাম ২০০০ টাকা। নোভেনা ব্র্যান্ডের ছোট-বড় পাঁচ থেকে সাতটি মডেলের প্লাস্টিক বডি ও স্টিল বডির ইলেকট্রিক কেটলি পাওয়া যায়। এক লিটার প্লাস্টিক বডির দাম ৮৫০, ১ দশমিক ৮ লিটারের দাম ১০০০, ১ দশমিক ৭ লিটার স্টিল বডির দাম ১৮০০, ১ দশমিক ৮ লিটারের দাম ২০০০, ৪ দশমিক ১ লিটারের দাম ২৩০০ টাকা। জেসিএল ব্র্যান্ডের অটোমেটিক ফ্লাস্ক অ্যান্ড কেটলি পাওয়া যাচ্ছে চারটি মডেলের। ১ দশমিক ৮ লিটার কেটলির (প্লাস্টিক বডি) দাম ৯৫০, ১ দশমিক ৫ লিটার ফ্লাস্ক অ্যান্ড কেটলির দাম ১৫০০, ১ দশমিক ৭ লিটার ফ্লাস্ক অ্যান্ড কেটলির দাম ১৮০০, ১ দশমিক ৮ লিটার কেটলির দাম ২০০০ টাকা। নোকা ব্র্যান্ডের ১ দশমিক ৭ লিটার প্লাস্টিক বডির দাম ১০৫০, ১ দশমিক ৭ লিটার স্টিল বডির দাম ১৪৫০-২০০০ টাকা। প্রতিটি ব্র্যান্ডের ইলেকট্রিক কেটলির জন্য এক বছরের ওয়ারেন্টি রয়েছে।
কফি মেকার
নোভা ব্র্যান্ডের কফি মেকারের দাম ১৫০০, সাইয়ানো ব্র্যান্ডের কফি মেকারের দাম ২০০০, ফিলিপস (হল্যান্ড) ব্র্যান্ডের দাম ৩৫০০ এবং নোকা ব্র্যান্ডের কফি মেকারের দাম ১৮০০ টাকা। সাদা, কালো, লাল, ম্যাজেন্টা ও মাল্টিকালারের কফি মেকার পাওয়া যায়। প্রতিটি কফি মেকারের জন্য এক বছরের ওয়ারেন্টি রয়েছে।
ফ্রাইপ্যান ও সসপ্যান
বাজারে পাবেন ননস্টিক ফ্রাইপ্যান, সসপ্যান ঢাকনাসহ ও ছাড়া। স্টিলের সসপ্যান পাওয়া যাবে ১ থেকে ১০ নম্বর অনুযায়ী। সসপ্যান ঢাকনাসহ দাম পড়বে ৬০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে। আর একসঙ্গে সেট নিলে পাওয়া যাবে ৪০০০ টাকার মধ্যে।
কোথায় পাবেন
পুরান ঢাকার ইসলামপুর, চকবাজার, গুলিস্তান, গাউসিয়া, নিউ মার্কেট, ডিসিসি মার্কেট, মৌচাক মার্কেট, বায়তুল মোকাররম, বসুন্ধরা সিটি, গুলশান ও মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় পাবেন রান্না বা রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। এসব জিনিসের জন্য বেশি ভিড় নিউ মার্কেট, ফার্মগেট ও বায়তুল মোকাররম মার্কেটে।
“আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, এই দরকারী বিষয়টির উপর লেখার জন্য। আসলে, গত কয়েক দিন ধরে, আমি আমার রান্নাঘরটি কিছু সুন্দর ও দরকারী রান্নাঘরের আনুষাঙ্গিক দিয়ে সাজানোর কথা ভাবছিলাম। তবে অনেকের সাথে কথা বলেও আমি এ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা পাইনি। তারপরে আমি খুঁজে পেলাম এই ব্লগটি। ব্লগটি পড়ে আমি আমার রান্নাঘরের জন্য প্রয়োজনীয় আনুষাঙ্গিকগুলো নির্বাচন করি এবং খুব সহজেই ঘরে বসেই fixit.com.bd থেকে যাবতীয় কিচেন এক্সেসরিজগুলো এক জায়গায় পেয়ে যাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রয়োজনীয় কিচেন এক্সেসরিজগুলো ফুটিয়ে তোলার জন্য । “