গত ২৯ মে ২০২২ থেকে ৪৮ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্টের আবেদন জমা নেওয়া বন্ধ রয়েছে। দেশের বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসে টানানো রয়েছে এ সংক্রান্ত নোটিশও। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও তথ্যটি আছে। অধিদপ্তরের নির্দেশেই থেকে ৪৮ পৃষ্ঠার আবেদন জমা নেওয়া বন্ধ আছে। দেশের বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করে জানা যায়, আগস্ট মাসে পুনরায় তা চালু হতে পারে।
কেন কেবল ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট?
ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধূরী জানান, দেশে সাময়িকভাবে তা বন্ধ রয়েছে ৪৮ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্টের আবেদন। তবে এটি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোতে ৪৮ পৃষ্ঠার আবেদন জমা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধূরী আরও বলেন, ‘এতদিন ধরে ৪৮ পৃষ্ঠার পাশাপাশি ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্টও বিতরণ করা হচ্ছিল। তবে আমরা যে টার্গেট করেছিলাম, সে অনুযায়ী ৬৪ পৃষ্ঠার আবেদন জমা পড়েনি এতদিন। ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্টের বইগুলো দীর্ঘদিন রেখে দেওয়ায় নষ্ট হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় টাকার অপচয় রোধে বিশেষ ব্যবস্থায় শুধু ৬৪ পৃষ্ঠার আবেদন জমা ও বিতরণ করা হচ্ছে। তবে এটি সাময়িক।’
আবেদন ফি কত?
৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠা ই-পাসপোর্টের নিয়মিত আবেদনের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট শেষ করার পর ১৫ থেকে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়। এক্ষেত্রে ফি ৪ হাজার ২৫ টাকা। জরুরি আবেদনে সাত থেকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে ৬ হাজার ৩২৫ টাকা এবং অতি জরুরি পাসপোর্ট পেতে (শুধু রি-ইস্যু) ৮ হাজার ৬২৫ টাকা ফি লাগে। ১০ বছরের জন্য একই পৃষ্ঠার পাসপোর্ট পেতে নিয়মিত বিতরণের ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, জরুরি বিতরণে ৮ হাজার ৫০ টাকা এবং অতি জরুরি বিতরণে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা ফি লাগে।
বাড়তি ফি গুনতে হচ্ছে
৪৮ পৃষ্ঠার ই-পাসপোর্টের আবেদন জমা নেওয়া বন্ধ থাকায় এখন গ্রাহককে ১৫ থেকে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদের পাসপোর্ট পেতে ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, জরুরি আবেদনে ৮ হাজার ৬২৫ টাকা এবং অতি জরুরি আবেদনে ১২ হাজার ৭৫ টাকা করে লাগছে। ১০ বছর মেয়াদি আবেদনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের যথাক্রমে ৮ হাজার ৫০ টাকা, ১০ হাজার ৩৫০ টাকা এবং ১৩ হাজার ৮০০ টাকা ফি জমা দিতে হচ্ছে।
পুরনো আবেদনকারীরা কী করবে
ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যারা আগে ৪৮ পৃষ্ঠার আবেদন করে এখন ফি জমা দিতে চাচ্ছেন, এ ধরনের আবেদনকারীকে ব্যাংকে ৬৪ পৃষ্ঠার ফি জমা দিতে হবে। নির্ধারিত তারিখে ছবি তোলার সময় সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে আবেদনপত্রে সংশোধন করে ৪৮ পৃষ্ঠার স্থলে ৬৪ পৃষ্ঠা করে দেবেন। তবে আগে যারা ৪৮ পৃষ্ঠার আবেদন করে ফি জমা দিয়ে আবেদন করেছেন, তাদের আর নতুন করে বাড়তি ফি দিতে হবে না। এরই মধ্যে যাঁরা ৪৮ পৃষ্ঠার জন্য আঙুলের ছাপ, চোখের মণি ও ছবি তুলেছেন, তাঁরা নির্ধারিত সময়েই পাসপোর্ট পাবেন।
আগস্টে পুনরায় ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট
ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের পরিচালক মো. সাইদুর রহমান জানান, আমরা আশা করছি, আগস্ট মাসের দিকে পুনরায় ৪৮ পৃষ্ঠা পাসপোর্টের আবেদন জমা নেওয়া হবে। তবে তিনি বিষয়টি এখনই নিশ্চিত না করলেও পাসপোর্ট অফিসের অনেক কর্মকর্তা ১ আগস্ট চালু হবে বলে আশা করছেন। প্রয়োজন না থাকলেও ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট নিতে বাধ্য হওয়ায় বাড়তি ফির কারণে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন। তাই খুব শিগগির ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ফের চালু হবে এমনটিই প্রত্যাশা।
.